Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

সাম্প্রতিক কর্মকান্ড

শ্রমজীবী মানুষ ও জাতীয় বাজেট

বাংলাদেশ একটি জনবহুল ও ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। শ্রম-ঘনত্বই এ দেশের অর্থনীতির বিশেষ বৈশিষ্ট্য। শ্রমজীবী মানুষের বিপুল অংশ (৪৭.৫%) কৃষিতে নিয়োজিত। অন্য দিকে প্রাতিষ্ঠানিক খাতের চেয়ে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে শ্রম-নিয়োজন অনেক বেশি। সর্বশেষ শ্রম সমীক্ষা অনুযায়ী ১৫ বছরের উর্দ্ধে শ্রমজীবী লোকের সংখ্যা ৫ কোটি ৪০ লক্ষেরও অধিক, যেখানে প্রাতিষ্ঠানিক খাতে মাত্র শতকরা ১২.৫ ভাগ এবং বাকি ৮৭.৫ ভাগ শ্রমজীবী মানুষ নিয়োজিত রয়েছে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে। শ্রম বাজারে নারীর অংশগ্রহণ ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পেলেও উল্লেখ্য যে প্রাতিষ্ঠানিক খাতে নারীর অংশগ্রহণ এখনও উল্লেখযোগ্য হারে কম।

জাতীয় অর্থনীতি ও শ্রমজীবী মানুষ

ধরন সংখ্যা পুরুষ %) নারী %)
কর্মজীবী লোকের সংখ্যা ৫,৪০,৮৪,০০০ ৩,৭৮,৮৩,০০০ ৭০%) ১,৬২,০২,০০০ ৩০%)
প্রাতিষ্ঠানিক ৬,৭৮৭,০০০ (১২.৫%) ৫,৫৪২,০০০(৮২%) ১,২৪৪,০০০(১৮%)
অপ্রাতিষ্ঠানিক ৪৭,৩৫০,০০০ ৮৭.৫%) ৩২,৩৯১,০০০ (৬৮%) ১৪,৯৫৯,০০০ ৩২%)

তথ্যসূত্র: লেবার ফোর্স সার্ভে-২০১০, বিবিএস

চিত্র ১: শ্রম খাত ও নারী-পুরুষ সংখ্যা; তথ্যসূত্র: লেবার ফোর্স সার্ভে ২০১০, বিবিএস

চিত্র ১: শ্রম খাত ও নারী-পুরুষ সংখ্যা; তথ্যসূত্র: লেবার ফোর্স সার্ভে ২০১০, বিবিএস

অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের একটি বিরাট অংশ জুড়ে রয়েছে কৃষি এবং অন্যান্য ছোট ও মাঝারি শিল্প। বাংলাদেশের শ্রম-নিয়োজনের ক্ষেত্রসমূহ বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, শ্রমজীবী মানুষের অবস্থান তিনটি ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ: (১) সরকারী শিল্প শ্রমিক – পাট, টেক্সাটাইল, চিনি, কাগজ প্রভৃতি (২) বেসরকারী শিল্প শ্রমিক – গার্মেন্টস, হালকা যান, পরিবহন, টেনারী প্রভৃতি এবং (৩). অপ্রাতিষ্ঠানিক শিল্প শ্রমিক – গৃহ শ্রমিক, নির্মাণ শ্রমিক, কৃষি শ্রমিক, হকার প্রভৃতি। তবে পরিতাপের বিষয় এই যে, একজন নারী কৃষি শ্রমিকের যেমন সাংবিধানিক কোন স্বীকৃতি নেই তেমনি কৃষি শ্রমিক হিসেবে পরিচয় দেয়ার মতো পরিচয়পত্রও নেই। এমনকি জীবন, স্বাস্থ্য, অক্ষমতা, মাতৃত্ব সম্বলিত সামাজিক নিরাপত্তা সুযোগ এবং বৃদ্ধ বয়সের ভাতার সুযোগ নিশ্চিতকরণের কোন নীতি বা কৃষিশ্রমিক কল্যাণ তহবিল (The Agriculture Workers’ Welfare Fund) বা জাতীয় বোর্ড গঠন এবং এ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় কোন প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো আজও উঠেনি।

চিত্র ২: বেকারত্বের চিত্র; তথ্যসূত্র: লেবার ফোর্স সার্ভে ২০১০.

চিত্র ২: বেকারত্বের চিত্র; তথ্যসূত্র: লেবার ফোর্স সার্ভে ২০১০.

কৃষিতে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড কমে যাওয়ার ফলস্বরূপ গ্রামাঞ্চলের এক বিরাট সংখ্যক জনগোষ্ঠী (যাদের সিংহভাগই নিরক্ষর কিংবা আধা-দক্ষ) কাজের সন্ধানে শহরমুখী হয়েছে। গ্রামাঞ্চলে কিছুটা অকৃষিজ পেশার সুযোগ বৃদ্ধি, কাজের টানে শহরমুখী হওয়া এবং শিল্পায়ন না হওয়া – প্রধানত এই তিনটি কারণে বাংলাদেশের জাতীয় অর্থনীতিতে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের বিকাশ ত্বরান্বিত হয়েছে। গ্রামাঞ্চলের পাশাপাশি শহরে জন্ম নিয়েছে বিশাল আকৃতির এক অপ্রাতিষ্ঠানিক খাত। এই খাতে কম মজুরিতে কর্মরত লক্ষ লক্ষ শ্রমজীবীর কর্ম নিরাপত্তা বলতে কিছু নেই। সুতরাং সামগ্রিকভাবে স্থায়ীত্বশীল কর্মসংস্থান বাড়েনি। শ্রমবাজার কাঠামোতে যে পরিবর্তন সূচিত হয়েছে তা কোন অর্থনৈতিক অগ্রগতির নির্দেশক নয় বরং এটাকে বলা যেতে পারে ‘কর্মসংস্থানহীন প্রবৃদ্ধি’।

বেকারত্বের ধরন বাংলাদেশ শহর গ্রাম
ছদ্দবেশী বেকারত্ব ২০.৩১ ১২.৪০ ২২.৬৭
সম্পূর্ণ বেকার ৪.৫৩ ৬.৪৫ ৩.৯৪

তথ্যসূত্র: লেবার ফোর্স সার্ভে-২০১০, বিবিএস

কর্মসংস্থানহীন এ প্রবৃদ্ধির ফলে প্রকৃত বেকারত্ব কমছে না। বাংলাদেশ শ্রম শক্তি সমীক্ষা-২০১০ এর হিসেব মতে ছদ্দবেশি বেকারত ¡(টহফবৎ বসঢ়ষড়ুসবহঃ) , যারা কোন নির্দিষ্ট সপ্তাহে ৩৫ ঘন্টার কম কাজ করেছে, তাদের হার ২০.৩১ ভাগ এবং বেকারত্বের হার ৪.৫৩ ভাগ। ছদ্দবেশি বেকারত্বের হার শহরের তুলনায় গ্রামে বেশি, যা যথাক্রমে ১২.৪০ ও ২২.৬৭ ভাগ। আবার বেকারত্বের (টহবসঢ়ষড়ুসবহঃ) হার গ্রামের তুলনায় শহরে বেশি, যা যথাক্রমে ৩.৯৪ ও ৬.৪৫ ভাগ। এতকিছুর পরেও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি থেমে থাকেনি, বিগত এক দশকে যা গড়ে ৬ শতাংশের কাছাকাছি।

লেখচিত্র ৩: বাজেটের সংক্ষিপ্তসার (বিভিন্ন বছর)

লেখচিত্র ৩: বাজেটের সংক্ষিপ্তসার (বিভিন্ন বছর)

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে যেসব খাত সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে তাদের মধ্যে তৈরি পোশাক খাত অন্যতম। এ খাতে প্রায় ৫ হাজার কারখানা রয়েছে যেখানে ৩.৫ মিলিয়নেরও অধিক শ্রমিক কাজ করছে। ২৫ বিলিয়ন ডলারের এ খাত জাতীয় রপ্তানি আয়ের প্রায় ৭৫ শতাংশ পূরণ করে থাকে (বিকেএমইএ, ওয়েভসাইট)। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক রপ্তানিকারক রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃত বাংলাদেশের এ পোশাক খাতের ৮০ ভাগ শ্রমিকই হচ্ছে সমাজের অবহেলা ও বঞ্চনার শিকার নারী গোষ্ঠি যাদের উল্লেখযোগ্য কোন শিক্ষাগত যোগ্যতাও নেই। বার্ষিক জিডিপি’তে এ খাতের অবদান ১৬ শতাংশ (বিকেএমইএ, ওয়েভসাইট) ।

কৃষি ও পোশাক খাত ছাড়াও যেসব খাতসমূহ বার্ষিক জিডিপি’তে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- নির্মাণ, শিপ বিল্ডিং/ব্রেকিং, চিংড়ি, পাট ও পাটজাত পণ্য, হোটেল/মোটেল ও রেস্তোরাসহ অন্যান্য সেবা এবং বিভিন্ন ধরনের ছোট ও মাঝারি শিল্প।

আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার ২০১৪ শিল্প খাত ও শ্রমিক

কর্মসংস্থান

  • মানবসম্পদ উন্নয়নের জন্য বৃত্তিমূলক ও কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমন্বয় জোরদার করা;
  • গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন ও পূর্ত কাজকে গতিশীল করার মাধ্যমে কমর্সংস্থান সৃষ্টি করা;
  • মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্প খাত উৎসাহিত করা;
  • প্রশিক্ষিত যুবক, যুব মহিলাদের সহজ শর্তে ঋণ দিয়ে আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা জোরদার করা;
  • দুই বছরের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে প্রচলিত ‘ন্যাশনাল সার্ভিস’ কর্মসূচিকে পর্যায়μমে সকল জেলায় সম্প্রসারিত করা;
  • কর্মসংস্থানের জন্য বিদেশে জনশক্তি রপ্তানি বৃদ্ধি করা;
  • কৃষি ও সেবা খাতে কর্মসংস্থানের বিদ্যমান সুযোগ আরও সম্প্রসারিত করা হবে এবং ব্যাপক সামাজিক কর্মসংস্থান প্রভৃতি পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হবে। এজন্য মানবসম্পদ উন্নয়ন, বৃিত্ত এবং পেশা শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাকে সমন্বিত ও প্রসারিত করা হবে। ২০২১ সাল নাগাদ কর্মক্ষম সব বেকার ও প্রচ্ছন্ন বেকারদের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা।

শ্রমিক ও প্রবাসী কল্যাণ

  • জীবনধারণের ব্যয়, মূল্যস্ফীতি এবং প্রবৃদ্ধির হারের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ ও পুননির্ধারণ প্রμিয়া চলমান রাখা;
  • মজুরি কমিশন এবং সংশ্লিষ্ট আইনসমূহের ভূমিকা বৃদ্ধি করা;
  • শ্রমিক-কর্মচারীদের ট্রেডভিত্তিক প্রশিক্ষণ প্রদান;
  • ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার নিশ্চিত করা;
  • পোশাক শিল্পের ন্যূনতম মজুরি কার্যকর এবং কর্মপরিবেশ ও শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা;
  • সকল শিল্প শ্রমিক, হত-দরিদ্র এবং গ্রামীণ কৃষি শ্রমিক এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য রেশনিং প্রথা চালু করা;
  • প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক হতে নমনীয় শর্তে ও সুদে বিদেশে যাওয়ার জন্য এবং দেশে ফেরার পর স্থায়ী কর্মসংস্থানের জন্য প্রয়োজনীয় ঋণ দেওয়া;
  • বিদেশে কর্মসংস্থান এবং প্রবাস-আয় বাড়ানোর উদ্দেশ্যে কর্মীদের কারিগরি প্রশিক্ষণের জন্য আরও অধিক সংখ্যক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট গড়ে তোলা;
  • ইউরোপ, আফ্রিকা এবং এশিয়ার বিভিন্ন দেশে শ্রম শক্তি রপ্তানির উদ্যোগ ফলপ্রসূ করার লক্ষ্যে বিদেশে আরও ২৩টি শ্রম উইং খোলার যে কার্যμম শুরু হয়েছে, তা দ্রুত সম্পন্ন করা হবে।

উল্লেখিত চিত্রসমূহ থেকে একথা সুনির্দিষ্টভাবে বলা যায় যে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের বাজেট বিশেষ করে উন্নয়ন বাজেট যেভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের বাজেট সেভাবে বৃদ্ধি পায়নি। যার ফলে, দেশের অভ্যন্তরের শ্রমিক স্বার্থ যেমন, শ্রমিকদের জন্য হাসপাতাল, আবাসন, সামাজিক নিরাপত্তা ইত্যাদি বিষয়সমূহ উপেক্ষিত থেকে গেছে। এছাড়া অনুন্নয়ন বাজেট এর পরিমাণও প্রায় প্রতি বছর প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের জন্য দ্বিগুণ ছিল।

দাবিসমূহ:

  • জাতীয় মজুরি কমিশন/নি¤œতম মজুরী বোর্ডকে শক্তিশালীকরণ ও পূনর্গঠনে জাতীয় বাজেটে সুনির্দিষ্ট বরাদ্দ।
  • নারী পুরুষের সমতা আনয়নে বিশেষ উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ ও সুনির্দিষ্ট বরাদ্দ।
  • শ্রমিকদের পেশাগত স্বাস্থ্য সুরক্ষার লক্ষ্যে বিশেষায়িত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা এবং গবেষণার লক্ষ্যে প্রাথমিক পর্যায়ে উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা ইনস্টিটিউট স্থাপন যা পরবতীতে স্থায়ী রূপ দান।
  • শ্রমিকদের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা চালুর লক্ষ্যে বাজেটে সুনির্দিষ্ট বরাদ্দ।
  • বেসরকারি খাতের শ্রমিকের আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট বাজেট বরাদ্দ।
  • জাতীয় পেনশন স্কিম প্রণয়নের মধ্য দিয়ে সকল শ্রমিকের জন্য পেনশন ব্যবস্থা চালু করা।
  • শ্রমিক দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য সেক্টর ও কারখানাভিত্তিক প্রশিক্ষণ প্রদাণের লক্ষ্যে (ক) প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, (খ) জেলা পর্যায়ে প্রশিক্ষণ ব্যয়, এবং (গ) গবেষণা কার্য পরিচালনায় বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ।
  • নারী কৃষি শ্রমিকের সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান। মৌসুমে স্থানান্তরিত শ্রমিকের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতকরণে কৃষক শ্রমিকের বিধিবিধান তৈরী ও কর্মদক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।
  • পল্লীকর্ম সংস্থান তহবিল (Rural Employment Guarantee Fund) গঠন এবং কৃষিশ্রমিকদের জন্য ‘উপজেলা এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জ’ কার্যালয় স্থাপন ও কল্যাণ তহবিল (The Agriculture Workers’ Welfare Fund) সৃষ্টি ও আইন প্রণয়ন করা
  • কৃষকশ্রমিকদের সমবায়ের মাধ্যমে বীজ উৎপাদন, বিপণন, সংরক্ষণের এবং কৃষি উপকরণ সমবায়ের মাধ্যমে বিতরণের ব্যবস্থা করা।
  • শ্রমিক ও প্রবাসী কল্যাণ

    • জীবনধারণের ব্যয়, মূল্যস্ফীতি এবং প্রবৃদ্ধির হারের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ ও পুননির্ধারণ প্রμিয়া চলমান রাখা;
    • মজুরি কমিশন এবং সংশ্লিষ্ট আইনসমূহের ভূমিকা বৃদ্ধি করা;
    • শ্রমিক-কর্মচারীদের ট্রেডভিত্তিক প্রশিক্ষণ প্রদান;
    • ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার নিশ্চিত করা;
    • পোশাক শিল্পের ন্যূনতম মজুরি কার্যকর এবং কর্মপরিবেশ ও শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা;
    • সকল শিল্প শ্রমিক, হত-দরিদ্র এবং গ্রামীণ কৃষি শ্রমিক এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য রেশনিং প্রথা চালু করা;
    • প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক হতে নমনীয় শর্তে ও সুদে বিদেশে যাওয়ার জন্য এবং দেশে ফেরার পর স্থায়ী কর্মসংস্থানের জন্য প্রয়োজনীয় ঋণ দেওয়া;
    • বিদেশে কর্মসংস্থান এবং প্রবাস-আয় বাড়ানোর উদ্দেশ্যে কর্মীদের কারিগরি প্রশিক্ষণের জন্য আরও অধিক সংখ্যক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট গড়ে তোলা;
    • ইউরোপ, আফ্রিকা এবং এশিয়ার বিভিন্ন দেশে শ্রম শক্তি রপ্তানির উদ্যোগ ফলপ্রসূ করার লক্ষ্যে বিদেশে আরও ২৩টি শ্রম উইং খোলার যে কার্যμম শুরু হয়েছে, তা দ্রুত সম্পন্ন করা হবে।

    উল্লেখিত চিত্রসমূহ থেকে একথা সুনির্দিষ্টভাবে বলা যায় যে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের বাজেট বিশেষ করে উন্নয়ন বাজেট যেভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের বাজেট সেভাবে বৃদ্ধি পায়নি। যার ফলে, দেশের অভ্যন্তরের শ্রমিক স্বার্থ যেমন, শ্রমিকদের জন্য হাসপাতাল, আবাসন, সামাজিক নিরাপত্তা ইত্যাদি বিষয়সমূহ উপেক্ষিত থেকে গেছে। এছাড়া অনুন্নয়ন বাজেট এর পরিমাণও প্রায় প্রতি বছর প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের জন্য দ্বিগুণ ছিল।

    দাবিসমূহ:

    • জাতীয় মজুরি কমিশন/নি¤œতম মজুরী বোর্ডকে শক্তিশালীকরণ ও পূনর্গঠনে জাতীয় বাজেটে সুনির্দিষ্ট বরাদ্দ।
    • নারী পুরুষের সমতা আনয়নে বিশেষ উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ ও সুনির্দিষ্ট বরাদ্দ।
    • শ্রমিকদের পেশাগত স্বাস্থ্য সুরক্ষার লক্ষ্যে বিশেষায়িত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা এবং গবেষণার লক্ষ্যে প্রাথমিক পর্যায়ে উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা ইনস্টিটিউট স্থাপন যা পরবতীতে স্থায়ী রূপ দান।
    • শ্রমিকদের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা চালুর লক্ষ্যে বাজেটে সুনির্দিষ্ট বরাদ্দ।
    • বেসরকারি খাতের শ্রমিকের আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট বাজেট বরাদ্দ।
    • জাতীয় পেনশন স্কিম প্রণয়নের মধ্য দিয়ে সকল শ্রমিকের জন্য পেনশন ব্যবস্থা চালু করা।
    • শ্রমিক দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য সেক্টর ও কারখানাভিত্তিক প্রশিক্ষণ প্রদাণের লক্ষ্যে (ক) প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, (খ) জেলা পর্যায়ে প্রশিক্ষণ ব্যয়, এবং (গ) গবেষণা কার্য পরিচালনায় বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ।
    • নারী কৃষি শ্রমিকের সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান। মৌসুমে স্থানান্তরিত শ্রমিকের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতকরণে কৃষক শ্রমিকের বিধিবিধান তৈরী ও কর্মদক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।
    • পল্লীকর্ম সংস্থান তহবিল (Rural Employment Guarantee Fund) গঠন এবং কৃষিশ্রমিকদের জন্য ‘উপজেলা এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জ’ কার্যালয় স্থাপন ও কল্যাণ তহবিল (The Agriculture Workers’ Welfare Fund) সৃষ্টি ও আইন প্রণয়ন করা
    • কৃষকশ্রমিকদের সমবায়ের মাধ্যমে বীজ উৎপাদন, বিপণন, সংরক্ষণের এবং কৃষি উপকরণ সমবায়ের মাধ্যমে বিতরণের ব্যবস্থা করা।